লি কুয়ান ইউয়ের প্রজ্ঞা থেকে বাংলাদেশের জন্য চিন্তা ও কর্মপরিকল্পনা

যা বলেছিলেন ১৯৬০ সালে …(লিকুয়ান ইউয়ের চিন্তা থেকে অনুপ্রাণিত, বাংলাদেশ-বাসীর জন্য) 
মেন্টর আসিফ

১৬ জুলাই ২০২৫

একটি জাতি গড়ার চার ধাপ 

“একটি জাতি গড়তে প্রথমে দরকার একটি অভিন্ন সমাজ-বোধ, এরপর সেই সমষ্টির ইচ্ছা কার্যকর করার পূর্ণ স্বাধীনতা।” — লিকুয়ান ইউ (১৯৬০)

বাংলাদেশ ইতিমধ্যে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র; তবে প্রকৃত ‘জাতি’ গড়া এখনো চলমান। নিচের চার ধাপে আমরা প্রত্যেকে হাতে-কলমে অবদান রাখতে পারি।

গভীর ভাবনা

১. সাধারণ পরিচয় গড়া না গেলে উন্নয়ন টেকসই নয়। ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, মানবিকতা,জুলাই অভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অভিন্ন অভিজ্ঞতা; এগুলোকে সচেতন চর্চা জরুরি।

২. স্বাধীন মত প্রকাশ ও অংশীদারিত্ব জাতি-গঠনের অক্সিজেন। শুধু রাজনৈতিক স্বাধীনতা নয়—অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ডিজিটাল স্বাধীনতাও নিশ্চিত করতে হবে।

৩. আধুনিক রাষ্ট্র কাঠামো ‘নিচ থেকে উপর’ পুষ্টি পেলে টেকসই হয়। স্থানীয় সমস্যা-সমাধানে জনগণের অংশগ্রহণই জাতীয় অগ্রগতির ইঞ্জিন।

৪. নাগরিক মানসিকতা পরিবর্তন ছাড়া অবকাঠামো উন্নয়ন পূর্ণ ফল দেয় না। স্বচ্ছতা, নিয়মানুবর্তিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা—এসব ঘরে ঘরে চর্চা করতে হবে।

১. অভিন্ন পরিচয়ের বীজ বপন

কর্ম: পরিবার, পাড়া বা কর্মস্থলে মাসে একবার ‘বাংলাদেশ গল্প’ সেশন করুন। মুক্তিযুদ্ধে জনতার আকাঙ্খা, জুলাই অভ্যুত্থানে জনতার আকাঙ্খা,ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার, টেকসই উন্নয়ন—যে গল্প গুলো আমাদের এক করে।

২. সম্মিলিত স্বার্থ চিহ্নিত

কর্ম: গ্রামে-শহরে অংশীদারিত্ব কৃষি, যুব স্কিল-হাব, ক্লিন-আপ ড্রাইভ ইত্যাদি ইত্যাদি —যা স্থানীয় চাহিদা মেটায় তা-ই নির্বাচন করুন।

মাপকাঠি: তিন মাসে একবার অংশগ্রহণ ও উপকারভোগীর সংখ্যা পরিমাপ করুন।

৩. মূল্যবোধ চালিত স্বাধীনতা নিশ্চিত

কর্ম: স্থানীয় বাজেট সভা, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি, বা সিটি কর্পোরেশন শুনানিতে তরুণ-তরুণীকে সাথে নিয়ে উপস্থিত হন।

লক্ষ্য: সিদ্ধান্তপ্রক্রিয়ায় নাগরিক কণ্ঠ ২০ %-এ তোলা।

৪. জাতীয় স্বপ্নে নিজেকে জড়ানো

কর্ম: “২০৪১ স্মার্ট বাংলাদেশ” লক্ষ্যকে ব্যক্তিগত পরিকল্পনায় আনুন—একটি নতুন দক্ষতা শিখুন, একটি স্টার্ট-আপ আইডিয়া টেস্ট করুন, বা একটি সামাজিক উদ্যোগে লগ্নি করুন।

ফল: বছরে অন্তত ৫ -১০ টি মাইলফলক নথিভুক্ত করুন (অর্জন, লাভজনকতা, বা কমিউনিটি ইমপ্যাক্ট ইত্যাদি ইত্যাদি )।

সারাংশ

জাতি-গঠন কোনো এককালীন ঘটনা নয়; এটি প্রতিদিনের ছোট ছোট আচরণে তৈরির কাজ। লি কুয়ান ইউ দেখিয়েছেন—যৌথ পরিচয় ও মুক্ত ইচ্ছাশক্তি মিললেই অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। আসুন, বাংলাদেশকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় 

নিতে আজই একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ নিই: গল্প বলি, সমস্যা সমাধান করি, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করি এবং সম্মিলিত কণ্ঠ উঁচু করি।

মেন্টর আসিফ একজন পথপ্রদর্শক ও গাইড,ভিশনারি শিক্ষাবিদ এবং সামাজিক সংস্কার স্ট্রাটিজিস্ট , যিনি শিক্ষা, ক্ষমতায়ন এবং জাতি গঠনের মধ্যে এক অনন্য সেতুবন্ধন তৈরি করেছেন। তিনি জটিল ধারণাগুলিকে সহজভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন, মানুষের নিজের ওপর বিশ্বাস জাগাতে পারেন এবং অর্থপূর্ণ ভাবনাগুলিকে বাস্তব কাজে রূপ দিতে পারে।